মোঃ কামাল হোসেন, ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলাশ পরকিয়া সন্দেহে এক গৃহবধুকে ঘরে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কাযদায় নির্যাতনের অভিযোগে নির্যাতনকারী প্রতিবেশি ৩ নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারী ) দুপুরে উপজেলা পৌর শহরের ইসলামাবাদ এলাকা থেকে তাদের আটক করে গৌরীপুর থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, মা হাবিলা বেগম (৫০) মেয়ে টুক্কুনি (৩০) ও স্বর্না (১৫)।
গৌরীপুর থানার ওসি দেলোয়ার আহামেদ এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গত শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী ) বিকেলে উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামের টুক্কুনি নামে অপর আরেক নারীর স্বামী শহীদের সাথে পরকিয়ার অভিযোগেই সেলিনাকে পেটানো হয়েছে। সেলিনাকে পেটানোর কাজে তার সাথে যোগ দেন প্রতিবেশি আবু মিয়ার স্ত্রী ও টুক্কুনির মা হাবিলা বেগম ও টুক্কুনির বোন স্বর্না আক্তার ও স্মৃতি আক্তার।
পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ( মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে রবিবার ভোররাত ৪ টার দিকে গৌরীপুরে কর্মরত দৈনিক জনতার প্রতিনিধি শেখ বিপ্লব তার ফেসবুক টাইমলাইনে নির্যাতনে দুটি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করেন।
অন্যদিকে নির্যাতনের ভিডিও ক্লিপ মুহুর্তেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন যোগাযোগ মধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এমন পাশবিক নির্যাতনের ভিডিও দেখে সমাজের সচেতন নাগরিকরা নানা ধরনের মন্তব্যও করেছেন। আবার কেও কেও কমেন্টের মাধ্যমে প্রকাশ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তিও দাবি করেছেন। তবে ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, ওই গৃহবধুকে অপর গৃহবধু টুক্কুনি ও তার লোকজন চুল টেনে হিচড়ে, নাকে মুখে কালি মেখে, একটি লাঠি দিয়ে রাস্তার উপর হেটে হেটে প্রকাশ্যে পিটাচ্ছে।
এবিষয়ে নির্যাতিত নারী সেলিনা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার সকাল ১১ টা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত লাগাতার কিলঘুষি ও তলপেটে লাথি এবং লাঠিপেটা করা হয়। গোপনাঙ্গেও আঘাত করা হয়। পরে তলপেটে লাথি মেরে রক্তাক্ত হন তিনি।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামের সোলেমান মড়লের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৩০) বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, পরকিয়ার অভিযোগে ওই গৃহবধূকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় পাশের বাড়ির শহিদের স্ত্রী টুক্কুনি বেগম ও তার লোকজন। পরে তাকে ঘরে আটকে রেখে দিনভর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন তারা। পরে ওই নারীর শরীর রক্তাত্ব যখম করে শুকনো মরিচের গুড়ো লাগানোও হয়েছে। মাথার চুল কেটে দিয়ে মুখে চুনকালি মেখে, গলায় জুতার মালা পড়িয়ে এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ঘুড়িয়েছে টুক্কুনি ও তার সহযোগীরা।
তবে সেলিনা অন্যের বাড়িতে চাকরানীর কাজ করেন ও তার স্বামী সোলেমান একজন সিএনজি চালক। সেলিনা দুই সন্তানের জননী বলেও জানিয়েছেন তারা।